মোর প্রভাতের এই প্রথম খনের কুসুমখানি তুমি জাগাও তারে ওই নয়নের আলোক হানি ॥ সে যে দিনের বেলায় করবে খেলা হাওয়ায় দুলে, রাতের অন্ধকারে নেবে তারে বক্ষে তুলে– ওগো তখনি …

  মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে একেলা রয়েছ নীরব শয়ন-‘পরে প্রিয়তম হে, জাগো জাগো জাগো ॥   রুদ্ধ দ্বারের বাহিরে দাঁড়ায়ে আমি আর কতকাল এমনে কাটিবে স্বামী প্রিয়তম হে, জাগো …

তুমি একলা ঘরে বসে বসে কী সুর বাজালে প্রভু, আমার জীবনে! তোমার পরশরতন গেঁথে গেঁথে আমায় সাজালে প্রভু, গভীর গোপনে ॥ দিনের আলোর আড়াল টানি কোথায় ছিলে নাহি জানি, অস্তরবির …

তোমার সুর শুনায়ে যে ঘুম ভাঙাও সে ঘুম আমার রমণীয়– জাগরণের সঙ্গিনী সে, তারে তোমার পরশ দিয়ো ॥ অন্তরে তার গভীর ক্ষুধা, গোপনে চায় আলোকসুধা, আমার রাতের বুকে সে যে …

  শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু, হে প্রিয়, মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিও । সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা কেমন করে মেটাব যে খুঁজে না …

প্রভু, তোমার বীণা যেমনি বাজে আঁধার-মাঝে অমনি ফোটে তারা। যেন সেই বীণাটি গভীর তানে আমার প্রাণে বাজে তেমনিধারা ॥ তখন নূতন সৃষ্টি প্রকাশ হবে কী গৌরবে হৃদয়-অন্ধকারে। তখন স্তরে স্তরে …

তোমায় আমায় মিলন হবে ব’লে আলোয় আকাশ ভরা। তোমায় আমায় মিলন হবে ব’লে ফুল্ল শ্যামল ধরা ॥ তোমায় আমায় মিলন হবে ব’লে রাত্রি জাগে জগৎ লয়ে কোলে, উষা এসে পূর্বদুয়ার …

কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে– সে তো আজকে নয় সে আজকে নয়। ভুলে গেছি কবে থেকে আসছি তোমায় চেয়ে সে তো আজকে নয় সে আজকে নয়। ঝরনা যেমন …

আমার ঢালা গানের ধারা সেই তো তুমি পিয়েছিলে,     আমার গাঁথা স্বপন-মালা কখন চেয়ে নিয়েছিলে ॥              মন যবে মোর দূরে দূরে              ফিরেছিল আকাশ ঘুরে              তখন আমার ব্যথার সুরে …

কণ্ঠে নিলেম গান, আমার শেষ পারানির কড়ি– একলা ঘাটে রইব না গো পড়ি ॥ আমার সুরের রসিক নেয়ে তারে ভোলাব গান গেয়ে, পারের খেয়ায় সেই ভরসায় চড়ি ॥ পার হব …

গানের ঝরনাতলায় তুমি সাঁঝের বেলায় এলে। দাও আমারে সোনার-বরন সুরের ধারা ঢেলে ॥ যে সুর গোপন গুহা হতে ছুটে আসে আকুল স্রোতে, কান্নাসাগর-পানে যে যায় বুকের পাথর ঠেলে ॥ যে …

আমার     যে গান তোমার পরশ পাবে              থাকে কোথায় গহন মনের ভাবে?।          সুরে সুরে খুঁজি তারে    অন্ধকারে, আমার  যে আঁখিজল তোমার পায়ে নাবে              থাকে কোথায় গহন মনের ভাবে?।   যখন  শুষ্ক প্রহর …

যতখন তুমি আমায় বসিয়ে রাখ বাহির-বাটে ততখন গানের পরে গান গেয়ে মোর প্রহর কাটে ॥ যবে শুভক্ষণে ডাক পড়ে সেই ভিতর-সভার মাঝে এ গান লাগবে বুঝি কাজে তোমার সুরের রঙের …

খেলার ছলে সাজিয়ে আমার গানের বাণী         দিনে দিনে ভাসাই দিনের তরীখানি ॥ স্রোতের লীলায় ভেসে ভেসে    সুদূরে কোন্‌ অচিন দেশে         কোনো ঘাটে ঠেকবে কিনা নাহি জানি ॥         নাহয় ডুবে গেলই,    নাহয় গেলই …

গানের ভিতর দিয়ে যখন দেখি ভুবনখানি তখন তারে চিনি আমি, তখন তারে জানি। তখন তারি আলোর ভাষায় আকাশ ভরে ভালোবাসায়, তখন তারি ধুলায় ধুলায় জাগে পরম বাণী ॥ তখন সে …

সুর ভুলে যেই ঘুরে বেড়াই কেবল কাজে বুকে বাজে তোমার চোখের ভর্ত্‍‌সনা যে॥ উধাও আকাশ উদার ধরা সুনীল-শ্যামল-সুধায়-ভরা মিলায় দূরে, পরশ তাদের মেলে না যে— বুকে বাজে তোমার চোখের ভর্ত্‍‌সনা …

 গানের সুরের আসনখানি পাতি পথের ধারে।       ওগো পথিক, তুমি এসে বসবে বারে বারে ॥ ঐ যে তোমার ভোরের পাখি    নিত্য করে ডাকাডাকি,       অরুণ-আলোর খেয়ায় যখন এস ঘাটের পারে,       মোর প্রভাতীর গানখানিতে …

আমি হেথায় থাকি শুধু গাইতে তোমার গান, দিয়ো তোমার জগত্‍‌-সভায় এইটুকু মোর স্থান॥ আমি তোমার ভুবন-মাঝে লাগি নি, নাথ, কোনো কাজে— শুধু কেবল সুরে বাজে অকাজের এই প্রাণ॥ নিশায় নীরব …

হেথা        যে গান গাইতে আসা আমার                            হয় নি সে গান গাওয়া–        আজো      কেবলি সুর সাধা, আমার                            কেবল গাইতে চাওয়া।                            আমার      লাগে নাই সে সুর, আমার                                   বাঁধে নাই সে কথা, …

জাগ’ জাগ’ রে জাগ’ সঙ্গীত—চিত্ত অম্ব্র কর তরঙ্গিত নিবিড়নন্দিত প্রেমকম্পিত হৃদয়কুঞ্জবিতানে।। মুক্তবন্ধন সপ্তসুর তব করুক বিশ্ববিহার, সূর্যশশিনক্ষত্রলোকে করুক হর্ষ প্রচার। তানে তানে প্রাণে প্রাণে গাঁথ’ নন্দনহার। পূর্ণ কর’ রে গগন-অঙ্গন …

রাজপুরীতে বাজায় বাঁশি বেলাশেষের তান। পথে চলি, শুধায় পথিক ‘কী নিলি তোর দান’।। দেখাব যে সবার কাছে এমন আমার কী-বা আছে, সঙ্গে আমার আছে শুধু এই কখানি গান।। ঘরে আমার …

দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার                      গানের ওপারে। আমার    সুরগুলি পায় চরণ, আমি                      পাই নে তোমারে।   বাতাস বহে মরি মরি   আর বেঁধে রেখো না তরী,   এসো এসো পার হয়ে মোর             হৃদয়-মাঝারে। …

তোমার কাছে এ বর মাগি, মরণ হতে যেন জাগি গানের সুরে।। যেমনি নয়ন মেলি যেন মাতার স্তন্যসুধা-হেন নবীন জীবনে দেয় গো পুরে গানের সুরে।। সেথায় তরু তৃণ যত মাটির বাঁশি …

কূল থেকে মোর গানের তরী দিলেম খুলে সাগর-মাঝে ভাসিয়ে দিলেম পালটি তুলে।। যেখানে ঐ কোকিল ডাকে ছায়াতলে সেখানে নয়, যেখানে ঐ গ্রামের বধু আসে জলে সেখানে নয়, যেখানে নীল মরণলীলা …

কেন     তোমরা আমায় ডাকো,     আমার মন না মানে।                পাই নে সময় গানে গানে ॥ পথ আমারে শুধায় লোকে,    পথ কি আমার পড়ে চোখে,          চলি যে কোন্‌ দিকের পানে     গানে …

তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে মাটির এই কলস আমার ছাপিয়ে গেল কোন্‌ ক্ষণে।।   রবি ঐ অস্তে নামে শৈলতলে,   বলাকা কোন্‌ গগনে উড়ে চলে—   আমি এই করুণ ধারার কলকলে   …

যারা      কথা দিয়ে তোমার কথা বলে তারা     কথার বেড়া গাঁথে কেবল দলের পরে দলে ॥            একের কথা আরে            বুঝতে নাহি পারে,            বোঝায় যত কথার বোঝা ততই বেড়ে চলে …

জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে ॥ এ মোর হৃদয়ের বিজন আকাশে তোমার মহাসন আলোতে ঢাকা সে, গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে তাহার পানে চাই দু বাহু বাড়ায়ে …

আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে॥ একতারাটির একটি তারে গানের বেদন বইতে নারে, তোমার সাথে বারে বারে হার মেনেছি এই খেলাতে তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে॥ …

   আমার সুরে   লাগে তোমার হাসি, যেমন     ঢেউয়ে ঢেউয়ে রবির কিরণ দোলে আসি ॥            দিবানিশি আমিও যে   ফিরি তোমার সুরের খোঁজে,            হঠাৎ এ মন ভোলায় কখন তোমার বাঁশি …